Uncategorized

১০,০০০ হাজার টাকার গেমিং ফোন

যারা PUBG Lite, Free Fire, Asphalt 9 বা Clash of Clans খেলেন, তারা জানেন একটা স্মুথ পারফরম্যান্সের ফোন কতটা জরুরি। তবে সবসময় কি অনেক টাকা খরচ করে গেমিং ফোন কেনা লাগে? একেবারেই না। মাত্র ১০ হাজার টাকার মধ্যেই এখন এমন কিছু ফোন পাওয়া যায় যেগুলো লাইট গেমিংয়ের জন্য একদম পারফেক্ট। বড় স্ক্রিন, ব্যাটারি ব্যাকআপ, ভালো প্রসেসর- সবকিছু মিলেই এগুলো স্টুডেন্ট বা ক্যাজুয়াল গেমারের জন্য বেস্ট ভ্যালু ফর মানি অপশন।

আজকের লিস্টে আমরা এমন কয়েকটি ফোন বেছে এনেছি, যেগুলো কম বাজেটে আপনাকে দেবে স্মুথ গেমিং এক্সপেরিয়েন্স। চলুন দেখে নেই ১০ হাজার টাকার গেমিং ফোন কোনগুলো, আর এগুলো থেকে ঠিক কিরকরম পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে তা নিয়ে বিস্তারিত সবকিছু।

১০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা ৫ গেমিং ফোন

  1. POCO C61
  2. Samsung Galaxy F05
  3. Samsung Galaxy M05
  4. Infinix Smart 10 – Official
  5. Motorola Moto G05

POCO C61

আমাদের আজকের বাজেট গেমিং ফোন লিস্টের শুরুতেই রাখছি POCO এর C61 মডেলটি। আসলে বাজেটের কথা হিসাব করে বলা যায়, এই ফোনটি আপনার জন্য সেরা একটি চয়েস হতে পারে। ফোনটি দেখতে স্টাইলিশ, রেগুলার ইউজেও বেশ স্মুথ পাবেন, আর লাইট গেমিংয়ের জন্য এটি একদম পারফেক্ট।

POCO C61-এর ডিসপ্লে সেকশনে দেওয়া হয়েছে 90Hz রিফ্রেশ রেটের ৬.৭৪ ইঞ্চি IPS LCD HD+ ডিসপ্লে। মানে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং, ভিডিও দেখা কিংবা গেমিং- সবকিছুই বেশ স্মুথ পাবেন। এছাড়া Corning Gorilla Glass 3 প্রটেকশন থাকায় স্ক্রিনও থাকবে নিরাপদ। এই ফোনটি দিয়ে Free Fire, PUBG Lite বা Asphalt 9-এর মতো গেম খেলার সময় ডিসপ্লের কালার ও মুভমেন্ট এক্সপেরিয়েন্স ভালোই পাবেন।

ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে লাইট গেমিংয়ের জন্য ডিজাইন করা MediaTek Helio G36 (12nm) প্রসেসর। PUBG Mobile Lite, Free Fire, Clash of Clans কিংবা Subway Surfers-এর মতো গেমগুলো মিড-সেটিংসে ল্যাগ ছাড়া খেলতে পারবেন। এতে রয়েছে 4GB/6GB র‍্যাম এবং ভার্চুয়াল র‍্যাম সাপোর্ট। ফলে মাল্টিটাস্কিংয়েও ফোনটি ঠিকঠাক পারফর্ম করবে।

গেমিং ফোনে ব্যাটারি ব্যাকআপ একটু ভালো হতে হয়। POCO C61-এ আছে 5000mAh ব্যাটারি, যা দিয়ে দীর্ঘসময় অনায়াসে গেম খেলা, ইউটিউব দেখা বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা যাবে। তবে চার্জিং সাপোর্ট 10W হওয়ার চার্জ হতে মোটামুটি ভালোই সময় লাগবে।

ক্যামেরার দিক থেকে ফোনটিতে আছে 8MP প্রাইমারি সেন্সর এবং অতিরিক্ত একটি 0.08MP লেন্স। রেগুলার লাইফের ছবি তোলার জন্য মোটামুটি, তবে এই ফোনটি ক্যামেরার চেয়ে গেমিং ও ব্যাটারি ফোকাসড। রয়েছে 5MP সেলফি ক্যামেরা, যা ভিডিও কল বা রেগুলার সেলফির জন্য যথেষ্ট।

ফোনটির ডিজাইনে Radiant Ring ক্যামেরা বাম্প এবং গ্লসি কালার অপশনগুলো একে প্রিমিয়াম একটা লুক দেয়। এর সাইড-মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটাও বেশ ফাস্ট কাজ করে। বড় ডিসপ্লে, 90Hz রিফ্রেশ রেট, লং ব্যাটারি লাইফ আর decent প্রসেসরের কারণে এটি স্টুডেন্ট বা নরমাল গেমারের জন্য একটি ভ্যালু ফর মানি ফোন।

আরও পরুনঃ- ১৫০০০ টাকায় সেরা গেমিং ফোন

Samsung Galaxy F05

যারা বাজেটের মধ্যে গেমিং এর পাশাপাশি একটা স্টাইলিশ ফোন খুঁজছেন, তাদের জন্য Samsung Galaxy F05 হতে পারে দারুণ একটি অপশন। ফোনটির লেদার প্যাটার্ন ব্যাক ডিজাইন একে আলাদা লুক দিয়েছে, হাতে নিলেই প্রিমিয়াম ফিল আসবে।

Galaxy F05-এ রয়েছে ৬.৫ ইঞ্চির HD+ PLS LCD ডিসপ্লে। কালার ও ব্রাইটনেস মোটামুটি ভালো, ইউটিউব, ফেসবুক বা টিকটক স্ক্রল করার জন্য একেবারে যথেষ্ট। যদিও AMOLED নয়, তবুও এই দামের মধ্যে ডিসপ্লে কোয়ালিটি ইউজারদের সন্তুষ্ট করবে।

ফোনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে MediaTek Helio G85 প্রসেসর, যেটি বাজেট সেগমেন্টে গেমিংয়ের জন্য বেশ জনপ্রিয়। Free Fire, PUBG Mobile Lite বা Asphalt 9-এর মতো গেম মিড-সেটিংসে স্মুথলি চালানো যায়। 4GB র‍্যাম থাকলেও সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন ভালো হওয়ায় নরমাল মাল্টিটাস্কিং সহজেই করতে পারবেন।

ক্যামেরার দিক থেকে গ্যালাক্সি এফ ০৫ এই বাজেটে ভালো পারফরম্যান্স দিবে। পিছনে রয়েছে 50MP প্রাইমারি ক্যামেরা আর সাথে একটি 2MP depth সেন্সর। ডে-লাইট কন্ডিশনে শার্প ও ডিটেইলড ছবি পাওয়া যায়। ভিডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য এটি 1080p@30fps সাপোর্ট করে। সামনে আছে 8MP সেলফি ক্যামেরা, যা ভিডিও কল বা সোশ্যাল মিডিয়ার ছবির জন্য যথেষ্ট ভালো।

গ্যালাক্সি এফ ০৫-এর সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হলো এর 5000mAh ব্যাটারি। একবার চার্জ দিলে দিনভর অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন। আর আছে 25W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট, যা এই প্রাইস পয়েন্টে অনেক ফোনেই পাওয়া যায় না।

ফোনটিতে কম্প্যাটিবল হেডফোন ব্যবহার করলে Dolby Atmos সাপোর্ট অডিও পাবেন। এই ফিচারটি গেমিং-এর সময় বেশ ভালোই অডিও এক্সপেরিয়েন্স দিবে। Free Fire বা PUBG Lite খেলার পাশাপাশি যারা ছবিও ভালো তুলতে চান, তাদের জন্য এটি একটি ভ্যালু ফর মানি ডিভাইস।

আরও পরুনঃ- গেমিং ফোন কুলার

Samsung Galaxy M05

আমাদের বাজেট গেমিং ফোন লিস্টে আবারো আসছে স্যামসাং এর Galaxy M05 মডেলটি। যারা বাজেটে ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ, বড় ডিসপ্লে আর decent গেমিং পারফরম্যান্স চান, তাদের জন্য এটি হতে পারে স্মার্ট চয়েস। ডিজাইনও বেশ সুন্দর, হাতে নিলে প্রিমিয়াম একটা ফিল আসবে।

Galaxy M05-এ আছে ৬.৭ ইঞ্চির HD+ PLS LCD ডিসপ্লে। বড় স্ক্রিনে ভিডিও দেখা, ফেসবুক-ইউটিউব স্ক্রল করা কিংবা লাইট গেম খেলার অভিজ্ঞতা হবে আরও ইমারসিভ। যদিও AMOLED নয়, তবে এই দামের মধ্যে ডিসপ্লে কোয়ালিটি নিয়ে হতাশ হবেন না।

পারফরম্যান্সের দিক থেকে এতে ব্যবহার করা হয়েছে MediaTek Helio G85 প্রসেসর। এই চিপসেটটা গেমিংয়ের জন্য বাজেট রেঞ্জে অনেক ভালো পারফরম্যান্স দিবে। Free Fire, PUBG Lite বা Asphalt 9-এর মতো গেম মিড-সেটিংসে সহজেই খেলতে পারবেন। সঙ্গে থাকছে 4GB র‍্যাম ও eMMC স্টোরেজ, আর চাইলে microSD কার্ড ব্যবহার করে স্টোরেজ বাড়ানো যাবে। নরমাল মাল্টিটাস্কিংয়েও ফোনটি বেশ স্মুথ কাজ করে।

ক্যামেরার ক্ষেত্রে Galaxy M05 পুর্বের F05-এর মতোই 50MP প্রাইমারি ক্যামেরা আর সঙ্গে একটি 2MP depth সেন্সর। ডে-লাইটে ছবি বেশ শার্প ও ডিটেইলস পাবেন। ভিডিওর জন্য পাচ্ছেন 1080p রেকর্ডিং @30/60fps। সামনে দিকে রয়েছে 8MP সেলফি ক্যামেরা, যা ভিডিও কল কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য একেবারে যথেষ্ট।

ব্যাটারি ব্যাকআপ হিসেবে আছে 5000mAh-এর ব্যাটারি এবং 25W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট। একবার ফুল চার্জ করলে সহজেই দিনভর গেম খেলা, ইউটিউব দেখা বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারবেন।

আরও পরুনঃ- ২০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো গেমিং ফোন

Infinix Smart 10 – Official

যারা বাজেটে একটা ব্যালান্সড ফোন খুঁজছেন, তাদের জন্য Infinix Smart 10 – Official হতে পারে চমৎকার একটি প্যাকেজ। এই ফোনের সবচেয়ে বড় হাইলাইট হলো এর 120Hz রিফ্রেশ রেটের 6.67 ইঞ্চি বড় ডিসপ্লে। ৭০০ নিটস ব্রাইটনেস থাকার কারণে আউটডোরেও ডিসপ্লে ঠিকঠাক দেখা যায়।

পারফরম্যান্সের দিক থেকে ফোনটিতে আছে Unisoc T7250 প্রসেসর। বাজেটের কথা ভেবে দেখলে এটি একেবারে খারাপ না। Free Fire, PUBG Lite, Asphalt 9 বা Subway Surfers-এর মতো লাইট গেম খেলা যাবে। র‍্যাম অপশনে পাচ্ছেন 3GB/4GB, আর স্টোরেজও 64GB থেকে 256GB পর্যন্ত পাওয়া যাবে। চাইলে microSD কার্ড ব্যবহার করে আরও স্টোরেজ বাড়াতে পারবেন।

ক্যামেরা সেকশনে সামনে-পেছনে দু’দিকেই আছে 8MP লেন্স। যদিও এই দামে ক্যামেরা এক্সপেক্টেশন খুব বেশি হওয়া উচিত না, তবে ডে-লাইটে সাধারণ ছবি বা ভিডিও কলের জন্য একেবারে যথেষ্ট। ভিডিও রেকর্ডিংয়ে পাওয়া যাবে 1440p সাপোর্ট, যা এই সেগমেন্টে বেশ ভালো অফার।

ব্যাটারির দিক থেকে Infinix Smart 10 ভালোই। এতে আছে 5000mAh ব্যাটারি, যা রেগুলার ইউজে একদিনের ব্যাকআপ দিবে। সঙ্গে থাকছে 15W চার্জিং। সাউন্ড সিস্টেমেও মিলবে বাড়তি সুবিধা, কারণ এতে আছে স্টেরিও স্পিকার। গেমিং কিংবা ভিডিও দেখার সময় সাউন্ড এক্সপেরিয়েন্স হবে আরও ইমারসিভ। 

Motorola Moto G05

আমরা এতক্ষণ যেসব ফোন নিয়ে কথা বলেছি, সেগুলো ছিল ১০ হাজার টাকার গেমিং ফোন। কিন্তু এবার যে ফোনটির কথা বলবো, সেটি নিতে আপনার বাজেট বাড়িয়ে প্রায় দেড় হাজার টাকা বেশি খরচ করতে হবে। প্রশ্ন আসতে পারে বাজেট বাড়ানোটা কি আসলেই দরকার? আসলে, যদি আপনি একটু বেটার পারফরম্যান্স চান তাহলে এই অতিরিক্ত টাকা খরচ করাটাই যুক্তিসঙ্গত হবে। আর এই কারণেই Motorola এর Moto G05 আমাদের লিস্টে জায়গা পাচ্ছে।

এই ফোনটিতে রয়েছে 6.67 ইঞ্চির IPS LCD ডিসপ্লে, আছে 90Hz রিফ্রেশ রেট। ভিডিও দেখা বা লাইট গেম খেলার সময় স্ক্রলিং এবং মুভমেন্ট ভালোই স্মুথ পাবেন। সানলাইটে আউটডোর ভিউয়িংও মোটামুটি ভালোই হবে।

পারফরম্যান্সের দিক থেকে Moto G05-এ ব্যবহার করা হয়েছে MediaTek Helio G81 Extreme প্রসেসর। লাইট গেমগুলো বেশ কমফোর্টেবলভাবে মিড সেটিংসে খেলতে পারবেন। র‍্যাম 4GB হলেও সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন ও স্টোরেজ থেকে ভার্চুয়াল র‍্যাম ব্যবহার করার কারণে মাল্টিটাস্কিং-এ কোনো সমস্যা হবে না।

ক্যামেরার দিক থেকেও ফোনটি বেশ ভালো। এতে রয়েছে 50MP মেইন ক্যামেরা, যা ডে-লাইট কন্ডিশনে শার্প আর ডিটেইলড ছবি তুলতে সক্ষম। ভিডিও রেকর্ডিংও পাওয়া যাবে 1080p @30fps এ। সেলফির জন্য আছে 8MP ফ্রন্ট ক্যামেরা, যা ভিডিও কল বা নরমাল সেলফির জন্য যথেষ্ট ভালো।

Moto G05-এর সবচেয়ে বড় ফিচার হলো এর 5200mAh ব্যাটারি। একবার ফুল চার্জ দিলে সারাদিন সহজেই ব্যবহার করা যাবে, আর লাইট ইউজে টানা দুই দিনও টিকতে পারে। যদিও চার্জিং স্পিড মাত্র 10W, তাই চার্জ হতে সময় কিছুটা বেশি লাগবে। তবে ব্যাটারি ব্যাকআপের জন্য এই ফোনটিকে এড়িয়ে যাওয়া কঠিন।

অন্যদিকে, ফোনটিতে আছে স্টেরিও স্পিকার ও Dolby Atmos সাপোর্ট। গেম খেলার সময় বা ভিডিও দেখার সময় সাউন্ড এক্সপেরিয়েন্স অন্য বাজেট ফোনের তুলনায় অনেক ভালো পাবেন।

সব মিলিয়ে, যারা বাজেট সামান্য বাড়িয়ে একটু বেশি পারফরম্যান্স, এডভ্যান্সড সাউন্ড ফিচার আর লং ব্যাটারি চান, তাদের জন্য Moto G05 হবে একটি ভ্যালু ফর মানি গেমিং ফোন।

সব মিলিয়ে বলা যায়, বাজেট ফোন মানেই যে গেমিং পারফরম্যান্স খারাপ হবে, তা কিন্তু একেবারেই নয়। ১০ হাজার টাকার মধ্যেই এখন এমন কিছু স্মার্টফোন পাওয়া যায়, যেগুলো দিয়ে জনপ্রিয় গেমগুলো আরামসে খেলা যায়। সবকিছু মিলেই এগুলো ক্যাজুয়াল গেমার বা স্টুডেন্টদের জন্য ভ্যালু ফর মানি চয়েস। আসলে শেষ পর্যন্ত, কোন ফোনটি নেবেন তা নির্ভর করবে আপনার চাহিদা ও বাজেটের ওপর।

এই ফোনগুলো সহ আরও অনেক বাজেট এবং গেমিং ফোন আপনি সহজেই খুঁজে পাবেন Apple Gadgets-এ। আমাদের কাছে পাবেন রিজেনেবল প্রাইসিং, অরিজিনাল ওয়ারেন্টি, আর নির্ভরযোগ্য সার্ভিস সব এক জায়গায়। তাই আমাদের থেকে আপনার পছন্দের ফোনটি বেছে নিন, অর্ডার করুন অনলাইনে অথবা শোরুমে এসে সরাসরি কিনুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *